• E-paper
  • English Version
  • মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৫৯ পূর্বাহ্ন

×

কয়রায় লবনাক্ত জমিতে রকমিলন ও অসময়ে তরমুজ চাষে কৃষকদের সফলতা

  • প্রকাশিত সময় : শনিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৪
  • ১২ পড়েছেন

কয়রা(খুলনা)প্রতিনিধিঃ

দুর থেকে দেখে মনে হতে পারে মাচায় ঝুলছে লাউ—কুমড়া। কিন্তু না কাছে গিয়ে একটু ভালো করে দেখলে দেখা যাবে এগুলো লাউ বা কুমড়া নয়। বসত বাড়ির ক্ষেতের মাচার উপর ঝুলছে রকমিলন। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল নদী ও সুন্দরবন বেষ্টিত খুলনার কয়রায় লবণাক্ত জমিতে বিভিন্ন প্রকার শাকসবজির পাশা পাশি অসময়ে উৎপাদিত প্রথম বার রকমিলন চাষ করে সাড়া ফেলেছেন খুলনার কয়রার ১০ কৃষক। এটি ব্যাপক উপকারিতা একটি ফল। সাধারনত এটি খুবই কম চাষাবাদ হয়ে থাকে। তবে কয়রায় প্রথমবার এই ফলের চাষাবাদ শুরু করেই ভাল উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। নতুন ফসলের এই প্রযুক্তি ভসমান বেডে মাচা তৈরি করে ফলটি চাষে সাফল্যের দেখা পেয়েছে কৃষকরা। ইসলামীক রিলিফ বাংলাদেশের ইকরা প্রকল্পের সহায়তায় অসময়ে রকমিলন চাষ করে প্রথমবারেই সাফল্য পেয়েছেন উপকুলীয় এই কৃষকরা। কম খরচে বেশি ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন তাঁরা। শুধু রকমিলন চাষ নয় ঐ প্রকল্পের মাধ্যমে অসময়ে তরমুজ চাষের পাশাপাশি মাছ চাষ সহ বিভিন্ন শাকসবজি চাষ করছেন ঐ ১০ পরিবারের সদস্যরা। তাদের দেখাদেখিতে এই এলাকার অনেক কৃষকই এই ঘেরের রাস্তায় কিংবা বসত বাড়ির ক্ষেতে রকমিলন ও তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের মাদারবাড়ি গ্রামের স্বামীহারা নমিছা খাতুন বলেন, আমার স্বল্প ভিটেবাড়িতে মাছ চাষের পাশাপাশি মাচার উপর রকমিল চাষ করে ভাল ফলন পেয়েছি। প্রথমবার এই ফসল উৎপাদন করে ভাল ফলন পাওয়ায় বাজারে বিক্রি করে সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরে আনতে পেরেছি। তিনি আরও বলেন, ইসলামীক রিলিফ বাংলাদেশের ইকরা প্রকল্পের মাধ্যমে আমাকে এই চাষাবাদে সহযোগীতার পাশাপাশি উৎসাহ জাগানো হয়। বর্তমানে আমার ঐ বসত বাড়ির সম্বনিত সবজি মাছ চাষাবাদ করে আমি খুবই খুশি। ভেটকি চাষে প্রচুর মাছ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছি। বর্তমানে বিভিন্ন শাকসবজি বিক্রি করতে পারছি। হুলুদ বর্নের অসময়ে তরমুজ বাজারে বিক্রি করে অনেক দাম পেয়েছি। তিনি এ ধরনের প্রকল্প আরও বাস্তবায়ন করার দাবি জানান।

একই এলাকার তরমুজ চাষী নুর ইসলাম সরদার বলেন, আমি প্রতিবছর মাছ চাষের পাশাপাশি ঘেরে পাড়ে বেগুন, পটোল, ঢ্যাঁড়স, মিষ্টি কুমড়াসহ অন্যান্য শাকসবজির আবাদ করি। এই বছর প্রথম মে মাসের শেষের দিকে ইকরা প্রকল্পের সহযোগিতা নিয়ে তাদের পরামর্শে ৩ বিঘা মৎস্য ঘেরের পাড়ে ১ শ টি তরমুজের চারা রোপন করেছিলাম। বিগত তিন মাসে গাছে রোগবালাইও নেই, ফলনও ভালো হয়েছে। সবুজ ও হুলুদ বর্নের তরমুজ ১ থেকে ৩ কেজি পর্যন্ত হয়েছে। এ সকল তরমুজ বাজরে বিক্রি করে অনেক অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। ইসলামীক রিলিফের ফিল্ড সহকারি প্রকল্প কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ বাশারুল ইসলাম বলেন, কয়রা উপজেলার কয়রা সদর ও মহারাজপুর ইউনিয়নের তাদের প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে মাদারবাড়ি, দশহালিয়া ও মহারাজপুর গ্রামের ১০ পরিবারকে রকমিলন, অসময়ে তরমুজ চাষ, মৎস্য ঘেরে ভটকি মাছ চাষ সহ বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষ করতে সহযোগিতা করা হয়েছে। তারা এই প্রকল্পের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছে। অনেকই তাদের সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরে আনতে পেরেছে। এ ছাড়া অনেক পরিবারের মাঝে হাইড্রোনিক্স ও লবন সহনীয ঘাস চাষ, বস্তায় আদা চাষ, মিষ্টি আলু চাষের জন্য ইসলামীক রিলিফ বাংলাদেশের ইকরা প্রকল্পের উদ্যোগে ও ইউএসএআইডি অর্থায়নে সহযোগিতার পাশাপাশি উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্যাহ আল মাহমুদ বলেন, কয়রায় সর্ব প্রখম রকমিলন চাষ করে কৃষকরা ভাল পেয়েছে। তাদের দেখাদেখি অনেকেই এ ধরনের চাষাবাদে ঝুকি পড়েছে। এ ধরনের প্রকল্প চলমান রাখার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

ইসলামীক রিলিফ বাংলাদেশের কয়রার অফিস ইনচার্জ মোঃ জি্হদুর হাসান বলেন, প্রচারিত ফসলের পাশাপাশি নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে ফসল উৎপাদন করার জন্য প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় কৃষকদের সহযোগিতা করা হয়েছে। জলবায়ু সহনশীল কৃষি প্রদর্শনী বাস্তবায়নের মাধ্যমে এ কাজগুলো করা হচ্ছে। কৃষকদর ভাগ্য পরিবর্তনের পরবর্তিতে অনেক কৃষকদের এই প্রকল্পের মাধ্যমে আরও সহযোগিতা করা হবে।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: BD IT SEBA